মাঘী পূর্ণিমা ২০২০ কবে? মাঘী পূর্ণিমার গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য জানলে আপনিও পালন করবেন!
মাঘী পূর্ণিমা ২০২০ কবে? মাঘী পূর্ণিমা কবে। মাঘী পূর্ণিমা ২০২০। মাঘী পূর্ণিমা। ২০২০ মাঘী পূর্ণিমা। মাঘী পূর্ণিমা 2020| মাঘী পূর্ণিমা 2020 কবে। ২০২০ সালের মাঘী পূর্ণিমার তারিখ ও সময়। মাঘী পূর্ণিমা ২০২০ ক্যালেন্ডার। ২০২০ মাঘী পূর্ণিমা ক্যালেন্ডার। জেনে নিন মাঘী পূর্ণিমার ইতিহাস। Maghi Purnima 2020| Maghi Purnima 2020 Date|Maghi Purnima 2020 Date and Time| Maghi Purnima Date|Maghi Purnima 2020 Date Bengali|Maghi Purnima 2020 West Bengal| Magh purnima 2020| Magh Purnima 2020 Date|
মাঘী পূর্ণিমা সনাতন হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মানুসারীদের নিকট অত্যন্ত পবিত্র। ২০২০ এর মাঘী পূর্ণিমা ৮ ফেব্রুয়ারি শনিবার ও পরদিন ৯ ফেব্রুয়ারি রবিবার এ দুইদিন পালিত হবে।
মাঘী পূর্ণিমার তাৎপর্য ও মাহাত্ম্য (হিন্দু ধর্ম মতে)
অতি প্রাচীনকালে কান্তিকা নামক এক নগরীতে ধনেশ্বর নামক দরিদ্র ব্রাহ্মণ বাস করতেন। সন্তানহীন ব্রাহ্মণ ও তাঁর স্ত্রীর দুঃখের শেষ ছিলনা। একটি সন্তানের আশায় তাদের মন সবসময় কাঁদতো। ব্রাহ্মণ ভিক্ষা করার জন্য দূর-দূরান্তে যেতেন। ভিক্ষা করতে করতে একদিন তিনি এক গ্রামে গিয়ে হাজির হলেন। সেই গ্রামের এক বাড়িতে উপস্থিত হয়ে তিনি ভিক্ষা প্রার্থনা করলেন। কিন্তু বাড়ির গৃহকর্তা সন্তানহীন ব্রাহ্মণকে ভিক্ষা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলেন। গৃহকর্তার কথা শুনে ক্লান্ত ব্রাহ্মণ খুব দুঃখ পেলেন।
ব্রাহ্মণের দুঃখী মুখ দেখে গৃহকর্তা বললেন, আমি তোমায় সন্তান হবার একটা উপায় বলে দিতে পারি। সঠিক পদ্ধতিতে সেই নিয়ম পালন করলে শীঘ্রই তুমি সন্তানের মুখ দেখবে। তুমি মা চন্দ্রিকা দেবী তথা মা কালীর পূজা ও উপবাস কর।
সেই কথা মতো ধনেশ্বর ও তাঁর স্ত্রী রূপমতী নিষ্ঠা সহকারে মা কালীর পুজো করেন। তাদের ভক্তি ও শ্রদ্ধাতে সন্তুষ্ট হয়ে মা কালী তাদের সন্তান লাভের বর প্রদান করেন। এর কিছুদিন পর ব্রাহ্মণ দম্পতির সন্তান জন্মলাভ করে।
মাঘী পূর্ণিমার তাৎপর্য ও মাহাত্ম্য (বৌদ্ধ ধর্ম মতে)
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছেও মাঘী পূর্ণিমা অত্যন্ত পবিত্র। মাঘী পূর্ণিমা তিথিতে বুদ্ধদেব তাঁর পরিনির্বাণের কথা ঘোষণা করেছিলেন। কথিত আছে যে, বুদ্ধের এরূপ সংকল্প গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে হঠাৎ ভীষণ ভূকম্পন শুরু হয়। ভিক্ষুসংঘ এর কারণ জানতে চাইলে বুদ্ধ বলেন, তাঁর পরিনির্বাণের সঙ্কল্পের কারণেই এরূপ হয়েছে; অর্থাৎ তথাগতের জন্ম, মৃত্যু ও বুদ্ধত্ব লাভকালে জগৎ এমনিভাবে আলোড়িত হয়।
বুদ্ধের পরিনির্বাণের কথা শুনে উপস্থিত ভিক্ষুরা বিষণ্ণ ও শোকাভিভূত হলে বুদ্ধ তাঁদের বলেন, ‘মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী, এজন্য দুঃখ করা অনুচিত। তোমরা সংকল্পবদ্ধ ও দৃঢ়চিত্ত হয়ে ধর্মচর্চা কর, তবেই জন্ম- জরা-ব্যাধি-মৃত্যুর এই সংসার উত্তীর্ণ হয়ে দুঃখকে জয় করতে পারবে।’ অর্থাৎ এই দিনটির তাৎপর্য হলো, আত্মশক্তির উন্নয়ন এবং সকল প্রকার ক্লেশ বিনাশপূর্বক কল্যাণময় নির্বাণ লাভের সামর্থ্য অর্জন। এ দিনটির আরও একটি শিক্ষা হলো, মানুষ যদি আধ্যাত্মিক সাধনায় পূর্ণতা লাভ করে তাহলে সে নিজের জীবন-মৃত্যুকেও নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়।
এদিন প্রতিটি বুদ্ধ বিহারে বুদ্ধপূজা, প্রদীপপুজো, শীলগ্রহণ, অনিত্যভাবনা, ভিক্ষুসংঘকে পিন্ডদান ও ধর্মীয় সভার আয়োজন করা হয়। বৌদ্ধসম্প্রদায়ের ধর্মীয় ও সামাজিক জীবনে এ দিনটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।