অজ্ঞাতবাসের সময় পাকিস্তানের এই শিব মন্দিরেই নাকি আত্মগোপন করেছিলেন পঞ্চপাণ্ডব
সমগ্র পাকিস্তানজুড়ে রয়েছে অসংখ্য হিন্দু মন্দির। পাকিস্তানের মন্দিরগুলোর মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত মন্দির হলো কটসরাজ মন্দির । এই মন্দির পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের চকওয়াল জেলার কটস গ্রামে অবস্থিত। প্রচলিত বিশ্বাস মতে, মর্ত্যলোকে এই মন্দিরেই সর্বপ্রথম শিবলিঙ্গের পূজা হয়েছিল। স্থানীয় মুসলিমরাও এই কটসরাজ মন্দিরের প্রতি বেশ শ্রদ্ধাশীল।
প্রচলিত বিশ্বাস মতে, মহাভারতের পঞ্চপাণ্ডব কৌরবদের কাছে পাশাখেলায় হেরে বারো বছর বনবাস ও এক বছর অজ্ঞাতবাস কাটানোর সময়, কটসরাজ মন্দিরে চার বছর অতিবাহিত করেছিলেন। আপন ভাইদের প্রাণ বাঁচানোর জন্য এই মন্দিরেই যক্ষের কাছে জ্ঞানের পরীক্ষা দিয়েছিলেন যুধিষ্ঠির।
আরো পড়ুনঃ কেরালার হাজার বছরের প্রাচীন মন্দির পাহারা দেয় নিরামিশাষী কুমির
এছাড়া পুরাণ মতে, এই মন্দিরের মধ্যস্থিত লেকটি শিবের অশ্রু থেকে তৈরী। পুরাণে উল্লেখ আছে, সতী দেবীর দেহত্যাগের পর শিবের অশ্রুপাতে পৃথিবীতে দুইটি হ্রদ সৃষ্টি হয়েছিল। একটি মতে এই দুই হ্রদের একটি হলো রাজস্থানের পুস্কর এবং অন্যটি কটসরাজ মন্দিরের হ্রদ। আরেকটি মতে এই দুটি হ্রদের একটি কটসরাজ এবং অপরটি উত্তরাখণ্ডের নৈনিতাল।
কটসরাজ মন্দির প্রাঙ্গণে সাতটি গ্রহের নামে সাতটি প্রাচীন মন্দির, মধ্যযুগের কয়েকটি মন্দির, একটি বৌদ্ধ স্তুপ, হাভেলি ও আধুনিককালে নির্মিত কয়েকটি মন্দির রয়েছে।
সবচেয়ে প্রাচীন মন্দিরটি সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জরাজীর্ণ রূপ ধারণ করেছে। ২০০৬-০৭ সালে পাকিস্তান সরকার এই মন্দিরের কিছু অংশ পুনঃনির্মাণ করে। এরপর হিন্দু ভক্তদের কাছে পর্যটন আকর্ষণ হিসেবে তুলে ধরতে ভারত থেকে দেববিগ্রহ নিয়ে গিয়ে এখানে প্রতিষ্ঠিত করে। ২০০৫ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী পাকিস্তান সফরকালে কটসরাজ মন্দির পরিদর্শন করেন।
আরো পড়ুনঃ বিশ্বের সবচেয়ে বড় হিন্দু মন্দির কম্বোডিয়ার আঙ্করভাট মন্দির