পূর্ব ভারতের সবচেয়ে বড় শিবলিঙ্গ রয়েছে নদিয়ার রাজরাজেশ্বর শিব মন্দিরে
পশ্চিমবঙ্গের প্রসিদ্ধ শিব মন্দিরগুলোর মধ্যে অন্যতম নদিয়া জেলার মাজদিয়ার রাজরাজেশ্বর শিব মন্দির । এই মন্দিরেই রয়েছে পূর্ব ভারতের সর্ববৃহৎ শিবলিঙ্গ। লোকমুখে শোনা যায়, রাজা কৃষ্ণচন্দ্র বাংলায় বর্গী আক্রমণের সময় তাঁর রাজধানী কৃষ্ণনগর থেকে মাজদিয়ায় সরিয়ে আনেন। এর নামকরণ করেন শিবনিবাস। এই স্থানে তিনি একটি সুন্দর রাজপ্রাসাদ ও কয়েকটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।
কালের আবর্তে অধিকাংশ মন্দির ধ্বংস হয়ে গেলেও তিনটি মন্দির এখনও অবশিষ্ট রয়েছে। অবশিষ্ট মন্দিরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরাতন মন্দির হলো রাজরাজেশ্বর শিব মন্দির। খ্রিস্টীয় ১৭৫৪ সালে এই মন্দিরটি নির্মিত হয়েছিল। লোকমুখে এই মন্দিরটি বুড়ো শিবের মন্দির নামে বেশী পরিচিত।
আরো পড়ুনঃ দোল যাত্রার ইতিহাস! দোল যাত্রার প্রচলন হলো কীভাবে?
রাজরাজেশ্বর শিব মন্দিরের চূড়া অনেক দূর থেকে দেখা যায়। চূড়াসমেত এই মন্দিরের উচ্চতা ১২০ ফুট।। আটকোনা মন্দিরের প্রতিটি কোনায় মিনার ধরনের সরু থাম। প্রথম দেখায় গির্জা বলে মনে হয়।
মন্দিরের অভ্যন্তরে একটি বৃহদাকার শিবলিঙ্গ রয়েছে। শিবলিঙ্গটির উচ্চতা ১১ ফুট ৯ ইঞ্চি ও বেড় ৩৬ ফুট। শিবলিঙ্গটি এতোটাই বড় যে, সিঁড়ি দিয়ে উঠে শিবের মাথায় জল ঢালতে হয়। সমগ্র পূর্ব ভারতে এতো বড় শিবলিঙ্গ আর নেই।
এই মন্দির প্রাঙ্গণে ১৭৬২ সালে মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের দ্বিতীয় স্ত্রী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত, বর্গাকার প্রস্থচ্ছেদের একটি মন্দির রয়েছে। এই মন্দিরের রাজ্ঞীসর সাড়ে সাত ফুট উঁচু। এছাড়া রয়েছে পশ্চিমমুখী চার চালা মন্দির, যা রামসীতা মন্দির নামে পরিচিত।
কীভাবে যাবেন রাজরাজেশ্বর শিব মন্দির?
পশ্চিমবঙ্গের শিয়ালদহ স্টেশন থেকে গেদে প্যাসেঞ্জারে কৃষ্ণনগর পেরিয়ে তারকনগর হল্ট। সেখান থেকে রিকশায় শিবনিবাস।
এছাড়া কৃষ্ণনগর শহর থেকে কৃষ্ণগঞ্জ হয়ে সড়কপথে প্রথমে যেতে হবে শোনঘাটা শোনঘাটা পেরুতেই ডান দিকে নজরে পড়বে যাত্রী ছাউনি, ‘বাসযাত্রী বিশ্রামাবাস, শিবনিবাস’। এবার ডান দিকের পথ ধরে এগিয়ে যান নদীর পারে। ঘাটে নৌকা পাবেন। নদী পেরিয়ে চলে যান শিবনিবাসে।
রাজরাজেশ্বর শিব মন্দিরের প্রাচীনত্ব নিয়ে ইতিহাসবিদদের মনে কোন দ্বিমত না থাকলেও, মন্দিরটি কতোটা প্রাচীন তা নিয়ে কোন প্রমাণ নেই।
আরো পড়ুনঃ কারুকার্যময় হিন্দু স্থাপত্য শৈলীর অপরূপ নিদর্শন বাংলাদেশের কাদিপুর শিববাড়ি