জানেন কী মা দুর্গার দশ হাতের দশটি অস্ত্রের তাৎপর্য?
মা দুর্গার অস্ত্র! বাঙালি হিন্দুদের প্রাণের উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। ভারত-বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বাঙালিরা এই উৎসবে মেতে উঠেন। মা দুর্গার অনেকগুলো রূপের কথা আমরা জানি। এর মধ্যে একটি রূপ হচ্ছে দশভূজা দুর্গা। এই রূপে দেবীর ১০টি হাত। এই দশটি হাতে রয়েছে আলাদা আলাদা দশটি অস্ত্র। অস্ত্রগুলো হচ্ছে শঙ্খ, চক্র, গদা, পদ্ম, খড়গ বা তলোয়ার, তীর-ধনুক, ত্রিশূল, বজ্র বা অশনি, সাপ এবং অগ্নি।
কথিত আছে, এই সবকটি অস্ত্রের সাহায্যেই নাকি সমগ্র অসুরকূলকে নিধন করেছিলেন মা দুর্গা। সনাতন পন্ডিতের আজকের আয়োজন থেকে আমরা জানবো, মা দুর্গার দশ হাতের দশটি অস্ত্রের তাৎপর্য ও মাহাত্ম্য।
১) শঙ্খ
শঙ্খ হল সৃষ্টির প্রতীক। পৌরাণিক মতে, শঙ্খের শব্দেই প্রাণের সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্বাস করা হয়, মা দুর্গাই হলেন সমস্ত পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা। তাই মা দুর্গার হাতে থাকে শঙ্খ। মহামায়ার হাতে এটি তুলে দিয়েছিলেন বরুণ দেব।
আরো পড়ুনঃ তিরুপতি বালাজি মন্দিরের অলৌকিক ইতিহাস ও অজানা কাহিনী!
২) চক্র
দেবী দুর্গার হাতে চক্র থাকার অর্থ হল, সমস্ত সৃষ্টির কেন্দ্রে রয়েছেন তিনি। আর, তাঁকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়ে চলেছে সমস্ত বিশ্ব। চক্র দিয়েছিলেন ভগবান বিষ্ণু৷
৩) দণ্ড বা গদা
মা দুর্গাকে গদা দিয়েছিলেন যমরাজ। গদা হল আনুগত্য, ভালোবাসা, এবং ভক্তির প্রতীক।
৪) পদ্ম
পাকে জন্মানো সত্ত্বেও পদ্মের রূপ মুগ্ধ করে সকলকে। তাই মায়ের হাতে পদ্ম থাকার অর্থ হল, তিনি অন্ধকারের মধ্যেই আলোর আবির্ভাব ঘটান। দেবী দুর্গার হাতে ভগবান ব্রহ্মা পদ্ম তুলে দেন ৷
৫) খড়্গ বা তলোয়ার
খড়্গ বা তলোয়ারের ধার হল মগজাস্ত্রের বুদ্ধির ধার। আর এই ধার দিয়েই যেন সমাজের সমস্ত বৈষম্য ও অশুভকে জয় করতে পারে মানুষ।
আরো পড়ুনঃ পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে যে সকল বিখ্যাত ব্যক্তিদের ঢুকতে দেয়া হয়নি!
৬) তীর-ধনুক
তীর-ধনুক একে অপরের পরিপূরক। ধনুর টঙ্কারে প্রকাশিত শক্তির ভারকে বহন করে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হানে তীর। অর্থাৎ, উভয়ই ইতিবাচক শক্তির প্রতিক ৷ মানবদেহে সেই শক্তির সঞ্চার করতেই মা দুর্গা নিজের হাতে তীর-ধনুক বহন করেন। মায়ের হাতে ধনুক ও তির দিয়েছিলেন বায়ু ৷
৭) ত্রিশূল
ত্রিশূলের তিনটি তীক্ষ্ণ ফলার আলাদা আলাদা অর্থ রয়েছে। মানুষ তিনটি গুণের সমন্বয়ে তৈরি। যেগুলি হল- তমঃ, রজঃ, এবং সত্ত্ব। মহামায়ার হাতে ত্রিশূল তুলে দিয়েছিলেন মহাদেব৷
৮) বজ্র বা অশনি
মা দুর্গার হাতের অশনি, দৃঢ়তা এবং সংহতির প্রতীক। এই দুই গুণের মাধ্যমেই জীবনে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছতে সক্ষম হন মানুষ। দেবরাজ ইন্দ্র দিয়েছিলেন বজ্র৷
৯) সাপ
চেতনার নিম্নস্তর থেকে উচ্চস্তরে প্রবেশ এবং বিশুদ্ধ চেতনার চিহ্ন এই সাপ। শেষ নাগ দিয়েছিলেন নাগহার ৷
১০) অগ্নি
অগ্নি জ্ঞান এবং বিদ্যার প্রতীক। অগ্নিদেব দিয়েছিলেন এই অস্ত্র ৷ মা দুর্গার অস্ত্র।