Featuredকৃষ্ণ কথাগীতাহিন্দু ধর্মের অজানা কাহিনী

গীতার ১৮ টি নামের মাহাত্ম্য জানুন

শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা বা গীতা সনাতন ধর্মের অন্যতম প্রধান ধর্মগ্রন্থ। গীতা মূলত মহাভারতের একটি অংশ। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা গীতাকে ভগবানের মুখনিঃসৃত বাণী মনে করেন। মানবধর্ম, দর্শন ও সাহিত্যের ইতিহাসে গীতা এক বিশেষ স্থানের অধিকারী। গীতা-র কথক শ্রীকৃষ্ণকে হিন্দুরা ভগবানরূপে পূজা করেন। স্বয়ং গীতায় শ্রীকৃষ্ণকে ‘শ্রীভগবান’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

শ্রী শ্রীগীতা মাহাত্ম্যম্ অংশে দেখা যায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সর্বপাপ নাশকারী গীতার নামাবলী প্রকাশ করেছেন,

গঙ্গা গীতা চ সাবিত্রী সীতা সত্যা পতিব্রতা।

ব্রাহ্মাবলির্ব্রহ্মবিদ্যা ত্রিসন্ধ্যা মুক্তিগেহিনী।।৪৯।।

অর্ধমাত্রা চিতানন্দা ভবঘ্নী ভ্রান্তিনাশিনী।

বেদত্রয়ী পরানিন্দা তত্ত্বার্থ জ্ঞানমঞ্জরী।। ৫০।।

শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা বা গীতার ১৮টি নাম এবং গীতার ১৮টি নামের মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য আজ আমরা জানবো।

১. গঙ্গা — গঙ্গাস্নান যেমন আমাদের পবিত্র করে তেমনি গীতা পাঠ আমাদের মন পবিত্র করে বলে এটিও গীতার নাম।

২. গীতা — শ্রীকৃষ্ণের অমর বাণী, এই গাঁথা গীত থেকে উৎপত্তি প্রাপ্ত নাম গীতা। এটি মহাভারতের অংশ ৭০০টি শ্লোকের সমষ্টি।

৩. সাবিত্রী — গীতাকে পতিব্রতা স্ত্রীর সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে, যে আসলেই তার স্বামীর ভালোবাসার পাত্র। আর এই পতি বলতে শ্রীকৃষ্ণকেই বুঝাচ্ছে। অর্থাৎ গীতা শ্রীকৃষ্ণের যেমন ভালোবাসার, এর পাঠকও তার প্রিয়।

৪. সীতা — দেবী সীতার পবিত্রতা যেমন অক্ষয় তেমনি গীতার পবিত্রতাও অক্ষয়। শত অসুর, দানব যেই এসে একে ছুঁয়ে যাক, অপবিত্র করার চেষ্টা করুক, কিন্তু গীতার পবিত্রতা নষ্ট হবেনা।

৫. সত্যা — পরমসত্য পরমেশ্বরের কথা বলা হয়েছে দেখে গীতার নাম হয়েছে সত্যা।

৬. পতিব্রতা — গীতাকে পতিব্রতা স্ত্রীর সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে যে আসলেই তার স্বামীর ভালোবাসার পাত্র। আর এই পতি বলতে শ্রীকৃষ্ণকেই বুঝাচ্ছে। অর্থাৎ গীতা কৃষ্ণের যেমন ভালোবাসার, এর পাঠকও তার প্রিয়।

৭. ব্রহ্মাবলি — ব্রহ্ম শক্তির পরিচায়ক এই গীতা।

৮. ব্রহ্মবিদ্যা — পরমব্রহ্মের জ্ঞান হলো এই গীতা।

৯. ত্রিসন্ধ্যা — গীতা পাঠের মূহুর্ত সন্ধ্যা বন্দনার মূহুর্তের সমান পবিত্র বলে, এর আরেক নাম ত্রিসন্ধ্যা।

১০. মুক্তিগেহিনী — মুক্তি ও মোক্ষের পথ দেখায় বলে গীতা মুক্তিগেহিনী

১১. অর্ধমাত্রা — ভগবানের অর্ধেক মাত্রা ফুটে ওঠে বলে এর নাম অর্ধমাত্রা, পূর্ণরূপ পাওয়া যায় যখন সকল শাস্ত্রের জ্ঞান হয়।

১২. চিতানন্দা — চিত্তকে আনন্দ দেয় বলে এটিও গীতার নাম।

১৩. ভবঘ্নী — ভব অর্থ বস্তু বা মায়ার জগৎ, আর ঘ্ন অর্থ ধ্বংস করা। ভব + ঘ্ন + ঈ = ভবঘ্নী, যার অর্থ – যা বস্তু জগতের মায়াকে ধ্বংস করে।

১৪. ভ্রান্তিনাশিনী — ঈশ্বরকে খোঁজার পথে সকল ভ্রান্তি নাশকারিণী।

১৫. বেদত্রয়ী — ঋক সাম যজুঃ আদি বেদের সারকথা স্বরূপিণী।

১৬. পরানন্দা — পাঠকালে পাঠককে ও শ্রবণে শ্রোতাকে পরম আনন্দ দেয় বলে এর নাম পরানন্দা।

১৭. তত্ত্বার্থ — সকল শাস্ত্রে যেই তত্ত্বের আলোচনা হয়েছে তার সরলার্থ এই গীতা।

১৮. জ্ঞানমঞ্জরী — প্রতিটা শব্দ যেন ফুলের মঞ্জরীর মতো জ্ঞান, তাই এর নাম জ্ঞানমঞ্জরী।

জয় গীতা। জয় গীতা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!