কার্তিক মাসে যেভাবে লক্ষ্মীর আরাধনা করলে আয় বৃদ্ধি হবে এবং রোগমুক্তি ঘটবে!
স্কন্দপুরাণে উল্লেখিত একটি শ্লোক অনুসারে, দেবী লক্ষ্মীর আরাধনার জন্য কার্তিক মাস সর্বশ্রেষ্ঠ। এতে ভক্তের রোগমুক্তি ঘটে ও সংসারে সমৃদ্ধি আসে।
কার্তিক মাসে (দামোদর মাস) ভগবান বিষ্ণুর পাশাপাশি মা লক্ষ্মীর পূজা করলে ধন-সম্পত্তি লাভ হয়।
কার্তিক মাসকে দামোদর মাস বলা হয়। সনাতন ধর্মে কার্তিক মাসকে পবিত্র মাস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কার্তিক মাসে শ্রীবিষ্ণুর পাশাপাশি মা লক্ষ্মীর পুজা করলে শুভ ফল লাভ করা যায়। পুরো কার্তিক মাসজুড়ে দেবী লক্ষ্মীর পুজোর পাশাপাশি লক্ষ্মী স্তোত্রও পাঠ করতে হবে। সঠিক মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে স্তোত্র পাঠ করলে সকল ধরণের রোগমুক্তি ঘটে, জীবন সুখ ও সমৃদ্ধিতে ভরে ওঠে।
১৪২৯ সালের কার্তিক মাস শুরু হবে ১৯ অক্টোবর আর শেষ হবে ১৭ নভেম্বর।
কার্তিক মাসে তুলসী পূজার নিয়ম রয়েছে। তুলসী ভগবান বিষ্ণুর অত্যন্ত প্রিয়। তাই অতি অবশ্যই এই মাসে শ্রীবিষ্ণুর পূজা করা উচিত। কার্তিক মাসে ভগবান বিষ্ণুর পাশাপাশি মা লক্ষ্মীর পূজা করলে ধন-সম্পত্তি লাভ হয়।
এবার চলুন জেনে নিই কার্তিক মাসে কী কী নিয়ম পালন করলে পরিবারের কল্যাণ হয়-
হিন্দু ধর্মের অন্যতম বৃহৎ পুরাণ হলো স্কন্দপুরাণ। এই পুরাণে মহাদেব শিব ও দেবী পার্বতীর পুত্র স্কন্দ বা কার্তিকের লীলা বর্ণিত হয়েছে। শৈব তীর্থস্থান সম্পর্কেও একাধিক আখ্যান রয়েছে এই পুরাণে। মহর্ষি ব্যাসদেব স্কন্দ পুরাণের রচয়িতা। স্কন্দপুরাণে উল্লেখিত একটি শ্লোক অনুসারে, দেবী লক্ষ্মীর আরাধনার জন্য কার্তিক মাস সর্বশ্রেষ্ঠ। এতে ভক্তের রোগমুক্তি ঘটে ও সংসারে সমৃদ্ধি আসে।
“রোগপহম পাতকানাসকৃতপরম সদ্বুদ্ধিদম্ পুত্রানাদিসাধকম্।
মুক্তানিদান নাহি কার্তিকব্রতদ্ বিষ্ণুপ্রিয়াদন্ডীহস্তি ভূতলে।”
কার্তিক মাসে কীভাবে লক্ষ্মী পূজা করবেন?
সকাল সকাল কাজ শেষ করুন এবং উপবাস পালন করুন। রবিবার ছাড়া প্রতিদিন স্নান করে তুলসী গাছে জল অর্পণ করুন। একই সাথে নিয়ম অনুযায়ী পুজো করুন।
ভগবান বিষ্ণু এবং লক্ষ্মীকে যথাযথভাবে পূজা করুন। প্রথমে দেবী লক্ষ্মীকে জল নিবেদন করুন। এরপর ফুল, মালা, সিঁদুর, নৈবেদ্য, ভোগ নিবেদন করুন দেবী লক্ষ্মীর চরণে। এর পর ঘি দিয়ে প্রদীপ জ্বালান। ধূপ জ্বালাতেও ভুলবেন না। পূজা শেষ হলে লক্ষ্মীমন্ত্র সহ লক্ষ্মী চালিসা, লক্ষ্মী স্তোত্র পাঠ করুন। এরপর কনকধারা স্তোত্র ও বিষ্ণু সহস্রনাম স্তোত্র পাঠ করলে আরও ভালো ফল হবে।
মহালক্ষ্মী স্তোত্র
নমস্কার স্তূ মহামায়ে শ্রীপীঠে সুরপুজিতে।
শঙ্খচক্রগদাহস্তে মহালক্ষ্মী নমোস্তুতে।।
নমস্কার গরুড়ুধে কোলাসুরভয়ঙ্করী।
দেবী মহালক্ষ্মীর শুভকামনা।।
সর্বজ্ঞ সর্ব্ববর্দে দেবী সর্বদুষ্টভয়ঙ্করী।
প্রতি দুঃখী দেবী মহালক্ষ্মী নমোস্তু তে।।
সিদ্ধিবুদ্ধিপ্রদে দেবী ভুক্তিমুক্তিপ্রদায়িনী।
মন্ত্রপুতে সর্বদা দেবী মহালক্ষ্মী নমোস্তুতে।।
আদ্যন্তরহিতে দেবী আদ্যশক্তিমহেশ্বরী।
যোগে যোগসম্ভূতে মহালক্ষ্মী নমোস্তুতে।
স্থূল সূক্ষ্ম মহারোদ্রে মহাশক্তিমহোদ্রে।
মহাপাপারে দেবী মহালক্ষ্মী নমোস্তুতে।।
পদ্মাসনস্থেতে দেবী পরব্রহ্মস্বরূপিণী।
পরমেশী জগন্মাতরমহলক্ষ্মী নমোস্তুতে।।
শ্বেতাম্বরধরা দেবী নানালঙ্কারভূষীতে।
জগৎস্থিতে জগন্মাতরমহলক্ষ্মী নমোস্তুতে।।
মহালক্ষ্ম্যাষ্টকম স্তোত্রম্যঃ পঠেদ্ভক্তিমানরঃ।
সর্বসিদ্ধিমবাপ্নোতি রাজ্য প্রাপ্তি সর্বদা।।
এককলে পঠেন্নিত্যম মহাপাপবিনাশনম্।
দ্বিকলম্যঃ পথেন্নিত্যম্ ধান্যধনস্যমান্বিতঃ।।
ত্রিকালম্যঃ পঠেন্নিত্যম মহাশত্রুবিনাশনম্।
মহালক্ষ্মীরভবেন্নিত্যম্ প্রসন্ন বরদা শুভা।