Jagadhatri Puja 2022: শুরু হল আলোর শহরের সেরা পুজো! হৈমন্তিকার সিংহ বাহনের তলায় হাতি কেন?
জগদ্ধাত্রী দেবী ত্রিনয়না, চতুর্ভূজা ও সিংহবাহিনী। দেবী জগদ্ধাত্রীর পূজা অনুষ্ঠিত হয় দুর্গাপূজার ঠিক একমাস পর কার্তিক মাসের শুক্লা নবমী তিথিতে।
Mythological Story: এই জগদ্ধারণই জগদ্ধাত্রীর পরম তপস্যা – তাঁর নিত্য লীলা, তাঁর নিত্য খেলা। জননীরূপে তিনিই বিশ্বপ্রসূতি, আবার ধাত্রীরূপে তিনিই বিশ্বধাত্রী।
জগদ্ধাত্রী দেবী ত্রিনয়না, চতুর্ভূজা ও সিংহবাহিনী। দেবী জগদ্ধাত্রীর পূজা অনুষ্ঠিত হয় দুর্গাপূজার ঠিক একমাস পর কার্তিক মাসের শুক্লা নবমী তিথিতে। কাত্যায়নীতন্ত্র–এ কার্তিকী শুক্লা নবমীতে দেবী জগদ্ধাত্রীর আবির্ভূত হওয়ার কথা আছে। তান্ত্রিক মতে জগদ্ধাত্রী পুজো করা হয়। সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী- তিনদিন ধরে জগদ্ধাত্রী পুজো করা হয়ে থাকে। তবে অনেকে নবমীর দিন তিন বার পূজা করে সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী পূজা সম্পন্ন করেন। কোথাও কোথাও প্রথম বা দ্বিতীয় পূজার পর কুমারী পূজারও আয়োজন করা হয়।
আলোর শহর চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজো বিখ্যাত। সেখানে প্রতিটি বারোয়ারি বা বাড়ির পুজো অনেকটা দুর্গাপুজোর মতই আয়োজন করা হয়। দুর্গাপূজার ন্যায় জগদ্ধাত্রী পূজাতেও বিসর্জনকৃত্য বিজয়াকৃত্য নামে পরিচিত। এমনকি পুষ্পাঞ্জলি ও প্রণাম মন্ত্রসহ পূজার অনেক মন্ত্রও দুর্গাপূজার অনুরূপ।
দেবী জগদ্ধাত্রী ব্রহ্মময়ী; তিনি পরমা যোগিনী। মহাযোগবলেই ব্রহ্মময়ী ধরে আছেন এই নিখিল বিশ্বসংসারকে। এই জগদ্ধারণই জগদ্ধাত্রীর পরম তপস্যা – তাঁর নিত্য লীলা, তাঁর নিত্য খেলা। জননীরূপে তিনিই বিশ্বপ্রসূতি, আবার ধাত্রীরূপে তিনিই বিশ্বধাত্রী। বিশ্বসার তন্ত্র মতে দেবীর উভয়ে ধ্যান মন্ত্রেই পূজা বিধি এক। বিভিন্ন পৌরাণিক সুত্রে দেবী দুর্গাকে দূর্বা-শ্যামা বলা হয়েছে। দেবী ভাগবতের ভুবনেশ্বরীর সাথে তন্ত্র মতে দুর্গার সাদৃশ্য দেখা যায়।
ধ্যান বা স্তবমন্ত্রে উল্লেখ না থাকলেও জগদ্ধাত্রী প্রতিমায় বাহন সিংহের পদতলে একটি হস্তীমুণ্ড থেকে। দেবীর ধ্যানে ‘দ্বীপ’-এর উল্লেখ পাওয়া যায়। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে, জগদ্ধাত্রী দেবী করীন্দ্রাসুর অর্থাৎ মহাহস্তীরূপী অসুরকে বধ করেছিলেন। এই কারণে দেবী জগদ্ধাত্রী করীন্দ্রাসুরনিসূদিনী নামে পরিচিত। চণ্ডীতে উল্লেখ আছে মহিষাসুর এক মহাহস্তি রুপে দেবীকে আক্রমণ করে এবং দেবী তার মুণ্ডচ্ছেদ করেন, তখন সে এক পুরুষ রূপে অবতীর্ণ হয়ে যুদ্ধে লিপ্ত হয়, মহালক্ষ্মী দেবী তাকে তির বিদ্ধ করেন। অস্ত্র হিসেবে তির-ধনুক দেবীর এই মূর্তিতে বর্তমান।
কেন উপনিষদ?
কেন উপনিষদে, দেবী ভাগবত পুরাণ ও অন্যান্য পুরান মতে উল্লিখিত একটি উপাখ্যান অনুসারে, একবার দেবাসুর দেবগণ অসুরদের পরাস্ত করেন। কিন্তু তারা বিস্মৃত হলেন যে নিজ শক্তিতে নয়, বরং ব্রহ্মের বলে বলীয়ান হয়েই তাদের এই বিজয়। ফলে তারা হয়ে উঠলেন অহংকার-প্রমত্ত। সেই সময় দেবী লক্ষ্মী এক কুমারী বালিকার বেশ ধারণ করে তাদের সম্মুখে উপস্থিত হন। তিনি একটি তৃণখণ্ড দেবতাদের সম্মুখে পরীক্ষা করে দেখার জন্য রেখে দেন। অগ্নি ও বায়ু তাদের সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করেও সেই তৃণখণ্ডটিকে দগ্ধ করতে পারলেন না।
তখন দেবগণ ইন্দ্র ওই বালিকার পরিচয় জানবার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেন। ইন্দ্র অহংকার-প্রমত্ত হয়ে বালিকার কাছে আসেননি, এসেছিলেন জিজ্ঞাসু হয়ে। তাই ব্রহ্মরূপী দেবী মহালক্ষী তার সম্মুখ হতে তিরোহিত হন। বরং তার সম্মুখের আকাশে দিব্য স্ত্রীমূর্তিতে আবির্ভূত হলেন হৈমবতী রমা । রমা ব্রহ্মের স্বরূপ ব্যাখ্যা করে ইন্দ্রের জ্ঞানপিপাসা নিবৃত্ত করেন। সেই দেবীকে পুরাণে জগদ্ধাত্রী নামে পরিচিতি লাভ করে। জগদ্ধাত্রী অর্থাৎ জগতকে যিনি ধারণ করেন।
তথ্য- উইকিপিডিয়া ও বাংলা পঞ্জিকা