মৃত্যু শয্যায় মা যশোদা শ্রীকৃষ্ণের কাছে কোন আক্ষেপ রেখেছিলেন?
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পরমপুরুষ হিসেবে বিবেচিত। মহাভারতের কোথাও শ্রীকৃষ্ণের বাল্যলীলার কোন উল্লেখ নেই। মহাভারতের কাহিনীতে দ্রোপদীর স্বয়ম্ভর সভায় প্রথমবারের মতো কৃষ্ণের দেখা পাওয়া যায়। শ্রীকৃষ্ণ তখন পূর্ণ যুবক। শ্রীকৃষ্ণের বাল্যলীলা থেকে অন্তিম লীলা পর্যন্ত ঘটনাকে একত্রিত করে রচিত হয়েছে শ্রীমদ্ভাগবৎ। সেই গ্রন্থে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ছাড়াও দেখা মিলবে একজন মানুষ শ্রীকৃষ্ণেরও।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জীবনী দেখলে আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে, কী হয়েছিল কৃষ্ণের পালিতা মা যশোদা ও পালক পিতা নন্দরাজের। এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় শ্রীমদ্ভাগবতে। সেখানে মহাভারতের শ্রীকৃষ্ণকে আবার ফিরিয়ে আনা হয় তাঁর শৈশবের লীলাভূমি গোকুল-বৃন্দাবনে। এর আগে যশদা ও নন্দের সাথে যাদবদের সাক্ষাতের কথা শ্রীমদ্ভাগবৎ থেকে জানা যায়। কুরুক্ষেত্র গমণকালে যাদবদের সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণও ছিলেন। সে ছিল এক আবেগঘন পুনর্মিলন। নন্দ ও বাসুদেব পরস্পরকে আলিঙ্গন করেন। দেবকী ও যশোদা পরস্পরের সুখ-দুঃখ ভাগ করে নেন।
আরো পড়ুনঃ শ্রীমদ্ভগবদগীতা যথাযথ ১ম অধ্যায়ঃ অর্জুনবিষাদযোগ
এরপর আরো একবার শ্রীকৃষ্ণ যশোদার কাছে ফিরে এসেছিলেন। তখন যশদা তাঁর শেষ শয্যায়। কৃষ্ণ যশোদার শয্যাপাশে উপস্থিত হলে মা যশোদা অনুযোগ করে জানান, তিনি কৃষ্ণের কোনও বিয়েতেই উপস্থিত থাকতে পারেননি। কৃষ্ণের বিবাহ অনুষ্ঠান দেখতে না পারাটাই তাঁর সব থেকে বড় আক্ষেপের বিষয়।
এর প্রতিউত্তরে বিচলিত শ্রীকৃষ্ণ যশোদাকে কথা দেন, এ জন্মে তাঁর সাধ পূরণ না হলেও পরের জন্মে তা অবশ্যই হবে। যশোদা বকুলদেবী হিসেবে জন্মগ্রহণ করবেন এবং নারায়ণের অবতার বেঙ্কটেশ্বরের বিবাহ প্রত্যক্ষ করবেন।
এই কাহিনী থেকে মা ও পুত্রের মধ্যকার এক চিরন্তন আশা-নিরাশার গল্প জানা যায়, সে বিষয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই।