Videos

তারাপীঠকে কেন মহাপীঠ বলা হয়?

পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার রামপুরহাট শহরের নিকটস্থ একটি ক্ষুদ্র মন্দির নগরী তারাপীঠ । এই শহরটি তান্ত্রিক দেবী মা তারার মন্দির ও মন্দির সংলগ্ন শ্মশানের জন্য জগৎবিখ্যাত। সনাতন ধর্মানুসারীদের নিকট এটি অত্যন্ত পবিত্র তীর্থক্ষেত্র।

কোন কোন গ্রন্থে তারাপীঠকে সতীর ৫১ পীঠের অন্যতম বলে বিবেচনা করা হয়। তবে অনেক হিন্দুশাস্ত্রবিদ তারাপীঠকে সতীপীঠ নয় বলেই মতামত দিয়েছেন। এই স্থানের নামের সাথেই জড়িয়ে রয়েছে মা তারার আরাধনার কথা।

পাগলা সাধক বামাক্ষ্যাপার জন্যও তারাপীঠ প্রসিদ্ধ। এই মন্দিরেই বামাক্ষ্যাপা পুজো করতেন এবং মন্দির লাগোয়া শ্মশানক্ষেত্রে বাবা কৈলাসপতি নামে এক তান্ত্রিকের নিকট তন্ত্রসাধনা করতেন। মা তারার আরাধনা ও পূজাতেই বামাক্ষ্যাপা নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। মন্দিরের কাছেই তাঁর আশ্রম অবস্থিত।

আরো পড়ুনঃ কেদারনাথ মন্দির সম্পর্কে ১০টি অজানা তথ্য

তারাপীঠ মন্দির সম্পর্কে লোকমুখে অসংখ্য কিংবদন্তী শোনা যায়। এর মধ্যে শক্তিপীঠ সম্পর্কিত পৌরাণিক কাহিনীটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ধারণা করা হয় এখানে সতীদেবীর তৃতীয় নয়ন বা নয়নতারা পতিত হয়েছে। ঋষি বশিষ্ঠ প্রথম এই রূপটি দেখতে পান এবং সতীকে তারা রূপে পূজা করেন।

তারাপীঠ মন্দিরের ছবি
মা তারার পদযুগল

আরেকটি কিংবদন্তী অনুসারে, সমুদ্র মন্থনের সময় হলাহল বিষ পান করায় শিবের কন্ঠ জ্বলতে শুরু করে। এ সময় মা তারা ভগবান শিবকে আপন স্তন পান করিয়ে তারা জ্বালা নিবারণ করেন। 

অন্য আরেকটি কিংবদন্তী অনুসারে, ঋষি বশিষ্ঠ এখানে মা তারার তপস্যা করেছিলেন। কিন্তু সাধনায় ব্যর্থ হয়ে তিনি তিব্বতে গিয়ে বিষ্ণুর অবতার বুদ্ধের সাথে সাক্ষাৎ করেন। বুদ্ধ তাঁকে বামমার্গে মদ্যমাংসাদি পঞ্চমকার সহ তারাদেবীর পূজা করতে বলেন। ধ্যানযোগে বুদ্ধ জানতে পারেন তারা মায়ের মূর্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আদর্শ স্থান হলো বর্তমান তারাপীঠ। বুদ্ধের উপদেশে বশিষ্ঠ তারাপীঠে এসে তিন লক্ষ বার তারা মন্ত্র জপ করেন।

তারাপীঠ মন্দির

মা তারা প্রীত হয়ে বশিষ্ঠের সম্মুখে আবির্ভূত হন। বশিষ্ঠ দেবীকে অনুরোধ করেন, বুদ্ধ ধ্যানকালে যে শিশু শিবকে স্তনপানরতা তারাদেবীকে দেখেছিলেন, দেবী যেন সে রূপেই তাঁকে দর্শন দেন। অতঃপর দেবী সেই রূপে দর্শন দেন এবং সেই রূপটি প্রস্তরীভূত হয়। সেই থেকে তারাপীঠ মন্দিরে শিশু শিবকে স্তনপানরতা মূর্তিতে মা তারা পূজিত হয়ে আসছেন। এ সকল কারণে তারাপীঠকে মহাপীঠ নামে অভিহিত করা হয়।

আরো পড়ুনঃ তামিলনাড়ুর এই দেবতার দর্শন পেতে আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে ৪০ বছর

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!