আরব দেশ কাতারে হিন্দু ধর্ম
সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী কাতারের জনসংখ্যা প্রায় ২৯ লক্ষ
পারস্য উপসাগরের তীরবর্তী একটি মুসলিম প্রধান দেশ কাতার। দেশটি আরব উপদ্বীপের পূর্ব উপকূল থেকে উত্তর দিকে প্রসারিত কাতার উপদ্বীপে অবস্থিত। কাতারের দক্ষিণে সৌদি আরব, এবং পশ্চিমে দ্বীপরাষ্ট্র বাহরাইন অবস্থিত। অন্যান্য আরব দেশের মতো কাতারের আবহাওয়া উষ্ণ ও শুষ্ক।
প্রাকৃতিক গ্যাস ও খনিজ তেলের বড় মজুদ রয়েছে কাতারে। প্রাকৃতিক সম্পদের কারণে দেশটির অর্থনীতি অত্যন্ত সমৃদ্ধ এবং দেশটি বিশ্বের শীর্ষ ধনী দেশগুলোর একটি। ঊনবিংশ শতকের শেষভাগ থেকে আল-থানি গোত্রের লোকেরা এই অঞ্চলটিকে একটি আমিরাত হিসেবে শাসন করে আসছে। বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে দেশটি ব্রিটিশ শাসনের অধীনে আসে। এরপর ১৯৭১ সালে কাতার পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে।
২০১৭ সাল পর্যন্ত কাতারের মোট জনসংখ্যা ২৬ লক্ষ ৪১ হাজার ৬৬৯ জন। কাতারের মোট জনসংখ্যার মাত্র ১৪ শতাংশ কাতারের বাসিন্দা। আর বাকি ৮৬ শতাংশ লোকই বিদেশী। তারা বিভিন্ন কাজকর্মের জন্য সেখানে বসবাস করে। আরবি ভাষা কাতারের সরকারি ভাষা। এখানকার প্রায় ৫৬% লোক আরবি ভাষাতে কথা বলেন। প্রায় এক-চতুর্থাংশ লোক ফার্সি ভাষায় কথা বলেন। বাকীরা ভারতীয় উপমহাদেশের ও ফিলিপিন দ্বীপপুঞ্জের অন্যান্য ভাষাতে কথা বলেন। আন্তর্জাতিক কাজকর্মে ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা হয়।
আরো পড়ুনঃ ওমানে হিন্দু ধর্ম
পারস্য উপসাগরীয় অন্যান্য দেশের মতো কাতারেও বিভিন্ন ধর্মের সংমিশ্রণ ঘটেছে। কাতারের মোট জনসংখ্যার ৬৫.৫% ইসলাম ধর্মানুসারী, ১৫.৪% সনাতন ধর্মানুসারী ও ১৪.২% খ্রীস্টান ধর্মানুসারী। কাতারের হিন্দু জনসংখ্যার
বেশীরভাগই ভারতীয় উপমহাদেশ তথা ভারত, বাংলাদেশ ও নেপালী বংশোদ্ভূত। মূলত তেল সমৃদ্ধ দেশটির বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডে অংশ নিতে অভিবাসী হিসেবে হিন্দুরা কাতারে পাড়ি জমিয়েছে।
২০১২ সালেও হিন্দু ধর্ম ছিল কাতারের তৃতীয় প্রধান ধর্ম। তবে গত এক দশকে কাতারে হিন্দু জনসংখ্যা বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। ফলে হিন্দু ধর্ম বর্তমানে কাতারের ২য় বৃহত্তম ধর্ম। মূলত ভারত ও নেপালের অভিবাসীদের মাধ্যমে এই বৃহৎ পরিবর্তন ঘটেছে।
আরো পড়ুনঃ কেদারনাথ মন্দিরের ইতিহাস ও ট্যুর গাইড
সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী কাতারের জনসংখ্যা প্রায় ২৯ লক্ষ। ১৫.৪ শতাংশ হিসেবে বর্তমানে কাতারে বসবাসকারী হিন্দু ধর্মানুসারীদের সংখ্যা প্রায় ৪ লক্ষ ৪৭ হাজার।
মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশে মন্দির থাকলেও কাতারে কোন হিন্দু মন্দির নেই। মন্দির না থাকলেও হিন্দু ধর্মীয় বিভিন্ন উৎসব যেমন, হোলি, দিওয়ালী, পোঙ্গল প্রভৃতি ঘরোয়াভাবে উদযাপিত হয়।