কেরালার হাজার বছরের প্রাচীন মন্দির পাহারা দেয় নিরামিশাষী কুমির
ভারতের কেরালার কাসারাগোড় জেলার একটি ছোট্ট গ্রামে দুই একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত হ্রদের মধ্যে রয়েছে একটি বিষ্ণু মন্দির। ভগবান বিষ্ণু এখানে অনন্তপদ্মনাভস্বামী রূপে পূজিত হন। এই হ্রদের চারদিকে আছে প্রাচীন গুহা। এই গুহাগুলো নিয়ে লোকমুখে নানা লোককথা প্রচলিত রয়েছে। মন্দির সংলগ্ন এলাকাতে আরো অনেক মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। কালস্রোতে সব মন্দির ধ্বংসপ্রাপ্ত হলেও বর্তমানে টিকে আছে শুধুমাত্র একটি মন্দির।
তবে এই মন্দিরের বিশেষত্ব অন্য জায়গায়। এই মন্দিরের হ্রদের জলে রয়েছে একটি বিশাল কুমির। ভক্তরা এর নাম দিয়েছেন বাবিয়া, যার অর্থ অভিভাবক। হ্রদের মাছ বা জলে স্নান করতে নামা কারোরই কোন ক্ষতি করেনা সে।
আরো পড়ুনঃ পশুপতিনাথ মন্দির নেপালের হাজার বছরের পুরনো মন্দির
সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো এই কুমির সম্পূর্ণ নিরামিষাশী। মন্দিরের পুজোর প্রসাদই তাঁর প্রধান খাবার। প্রতিদিন দুপুরে নির্দিষ্ট সময়ে সে জলের উপর ভেসে ওঠে। তখন মন্দিরের পুরোহিতরা নিজ হাতে চালের গুঁড়ো আর গুড় দিয়ে তৈরি বিষ্ণুর প্রসাদ খাওয়ান।
মন্দিরের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই এই হ্রদে একটি করে কুমির রক্ষী হিসেবে আছে। ১৯৪৫ সালে এক ব্রিটিশ সৈন্য গুলি করে মেরেছিল এর আগের কুমিরকে। এর অল্প কিছুদিনের মধ্যে সর্পদংশনে তাঁর মৃত্যু হয়। ভক্তদের বিশ্বাস, অনন্তনাগ ঐ সৈন্যকে শাস্তি দিয়েছেন। তবে সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় অল্প কিছুদিনের মধ্যে ওই হ্রদে চলে আসে আরো একটি কুমির। কোথা থেকে, কীভাবে এলো, তা কেউ জানেনা। সে কুমিরটিই আজকের বাবিয়া।
ভক্তদের বিশ্বাস এ কোন সাধারণ কুমির নয়, সে বিষ্ণুর আরেক রূপ। প্রচলিত বিশ্বাসমতে, বাবিয়ার দেখা পাওয়া খুব শুভ। যদি কোনদিন সে দেখা না দেয় তা অশুভ বলে বিবেচনা করা হয়।
আরো পড়ুনঃ নেপালের শীর্ষ ১০ হিন্দু মন্দির