আগামীকাল কৌশিকী অমাবস্যা! জেনে নিন কেন কৌশিকী অমাবস্যা পালন করা হয়?
আগামী ১৯ আগস্ট পালিত হবে কৌশিকী অমাবস্যা। বছরের অন্যান্য অমাবস্যা থেকে কৌশিকী অমাবস্যা একটু আলাদা। ভাদ্র মাসের এই অমাবস্যা তিথি তন্ত্রমতে ও শাস্ত্রমতে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। অনেক কঠিন ও গুপ্ত সাধনায় আশাতীত সাফল্য পাওয়া যায় এই অমাবস্যায়।
তন্ত্রমতে এই রাতকে ‘তারা রাত্রি’ বলা হয়ে থাকে। এই অমাবস্যার বিশেষ লগ্নে স্বর্গ ও নরক উভয় স্থানের দরজা মুহূর্তের জন্য খোলে ও সাধক নিজের ইচ্ছা মতো ধনাত্মক অথবা ঋণাত্মক শক্তি সাধনার মধ্যে আত্মস্থ করেন ও সিদ্ধি লাভ করেন৷
শ্রীশ্রীচণ্ডীতে বর্ণিত মহাসরস্বতী দেবীর কাহিনী থেকে জানা যায়, একবার শুম্ভ ও নিশুম্ভ নামক দুই অসুর কঠিন সাধনার মাধ্যমে ব্রহ্মাকে তুষ্ট করেছিল। ব্রহ্মা তাদের চতুরানন বর দেন। এই বরের ফলে শুম্ভ-নিশুম্ভকে কোন পুরুষ বধ করতে পারবেন না। মাতৃগর্ভ থেকে জন্ম নেননি এমন কোন নারী তাদের বধ করতে পারবেন।
কিন্তু এই মর্ত্যলোকে এমন নারী কোথা থেকে আসবে?
পূর্ব জন্মে পার্বতী যখন সতী রূপে দক্ষ যজ্ঞ স্থলে আত্মাহুতি দেন, তার কারণে এই জন্মে ওঁর গাত্র বর্ণ কালো মেঘের মতো। তাই ভোলানাথ তাঁকে কালিকা ডাকতেন। অসুর ভ্রাতাদ্বয়ের অত্যাচারে দেবতারা যখন অতিষ্ঠ তখন তারা কৈলাশে আশ্রয় নিলেন। তখন ভগবান শিব দেবী পার্বতীকে বললেন, “কালিকা তুমি ওদের পরিত্রাণ করো।” সর্বসম্মুখে কালী বলে সম্বোধন করায় পার্বতী অত্যন্ত ক্ষুব্ধ ও অপমানিত হয়ে মানস সরোবরে কঠিন তপস্যায় মগ্ন হলেন।
তপস্যা শেষে মানস সরোবরের শীতল জলে স্নান করে দেবী নিজের দেহের সব কালো পরিত্যাগ করলেন ও পূর্ণিমার চন্দ্রের ন্যায় গাত্র বর্ণ ধারণ করলেন। কালো কোশিকাগুলো থেকে অপূর্ব সুন্দর কৃষ্ণবর্ণ এক দেবীর সৃষ্টি হয়। তিনিই দেবী কৌশিকী। যে অমাবস্যা তিথিতে কৌশিকী দেবীর উৎপত্তি হয় এবং শুম্ভ-নিশুম্ভকে বধ করেন, সেই অমাবস্যার নাম কৌশিকী অমাবস্যা।
এই অমাবস্যা তিথিতে দশ মহাবিদ্যার অন্যতম দেবী তারা মর্ত্যধামে আবির্ভূত হন। পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলায় অবস্থিত তারাপীঠে এ উপলক্ষে বিশাল উৎসবের আয়োজন করা হয়। সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ সনাতন ধর্মানুসারী এ সময় তারাপীঠে আসেন।