মন্দির

কেরলের পদ্মনাভস্বামী মন্দির – কি আছে রহস্যময় পাতালঘরে?

কেরলের পদ্মনাভস্বামী মন্দির – কি আছে রহস্যময় পাতালঘরে?

সৃষ্টিকর্তা পরম করুণার আধার। আবার তিনিই এই জগতের শাসনকর্তা। ভালো কাজ করলে তিনি পুরস্কৃত করেন, আবার খারাপ কাজ করলে তিনি-ই শাস্তি দেন। তবে এর বাইরেও সৃষ্টিকর্তার আদেশ অমান্য করেও মানুষ পড়তে পারে তাঁর কোপে। এমনটাই ঘটেছিল ২০১১ সালে।

পৃথিবীর সবচেয়ে সম্পদশালী মন্দির হিসেবে বিবেচনা করা হয় কেরলের পদ্মনাভস্বামী মন্দির-কে। প্রায় সকল পুরান যেমন, ব্রহ্ম পুরাণ, মৎস্য পুরাণ, বরাহ পুরাণ, স্কন্দ পুরাণ, পদ্ম পুরাণ, বায়ু পুরাণ, ভাগবত পুরাণ এবং এমনকি মহাভারতেও উল্লেখ আছে এই মন্দিরের। ইতিহাসের সূত্র ধরে এগোলে দেখা যায় ষোড়শ শতকের মাঝামাঝি ত্রিবাঙ্কুর রাজবংশের হাতে এই পদ্মনাভস্বামী মন্দির সংস্কারের কথা।

আরো পড়ুনঃ কলকাতা শহরের যে কালী মন্দির পরিচালনা করেন চীনারা!

বিষ্ণুর আরেক নাম পদ্মনাভস্বামী। তাঁর নাভিপদ্মে অবস্থান করেন ব্রহ্মা, তাই তাঁকে পদ্মনাভস্বামী বলা হয়। যে মন্দিরের কথা বলা হয়েছে, সেই মন্দিরের কূল দেবতা স্বয়ং বিষ্ণু।

কেরলের পদ্মনাভস্বামী মন্দির - কি আছে পাতালঘরে?

কেরলের পদ্মনাভস্বামী মন্দির। এই মন্দিরের নিচে রয়েছে পাতালঘর। এই পাতালঘরে মোট ছয়টি বন্ধ দরজার অস্তিত্ব পাওয়া যায় ২০১১ সালে। তন্মধ্যে দ্বিতীয় কক্ষটি ছাড়া বাকি সব কক্ষই খোলা হয় ওই বছরে। কক্ষটি খোলার পরেই সবাই স্তম্ভিত হয়ে পড়েন। এতো এতো সম্পদ মন্দিরের পাতালঘরে অযত্নে পড়ে আছে। সর্বমোট ২২ বিলিয়ন মূল্যের সম্পদ খুঁজে পাওয়া যায় পাঁচটি কক্ষ থেকে যা গণনা করতে সময় লেগেছিল ১২ দিন। কিন্তু, অনেক চেষ্টা করেও দ্বিতীয় কক্ষটি খোলা যায় নি। পরবর্তীতে চেষ্টাও করা হয়নি আর। কেনোনা যে আইনজীবীর দাখিল করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই বন্ধ দরজা খোলার চেষ্টা করা হয়, আশ্চর্যজনক ভাবে ঐ আইনজীবী ঐ বছরেই মৃত্যু বরন করেন। তখন যারা এই মন্দিরের দরজাগুলো খোলার বিপক্ষে ছিলেন তাদের চাপে আদালত ঘোষণা থেকে পিছিয়ে আসেন।

আরো পড়ুনঃ জেনে নিন কীভাবে তিথি গণনা করা হয়? তিথি পরিচয় – পর্ব ০১

কি আছে ঐ দরজার ভিতরে? জানা যায়, ঐ দরজায় অঙ্কিত আছে অসংখ্য সাপ এর ছবি। এর মধ্যে একটি সাপের ফনা দেখে চেনা যায় যে সাপটি অনন্ত নাগ বা শেষ নাগ। ক্ষীরসমূদ্রে যাকে শয্যা করে বিশ্রাম নেন শ্রী বিষ্ণু। অনেকে বিশ্বাস করেন যে এই দরজার ভিতরে রাখা আছে ভগবান বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র। স্বয়ং নৃসিংহদেব পাহারা দেন এই দরজায়। ধারনা করা হয়, এই দরজাটি খুললে পৃথিবী জুড়ে প্রলয় নেমে আসবে। যারা খুলবেন তাঁরা নির্বংশ হবেন।

আরো আশ্চর্যের বিষয়, অনেকের মতে ওই দরজায় কান রাখলে এক অদ্ভুত আও্যাজ শোনা যায়। যেন অনেক দূর থেকে মন্ত্র উচ্চারনের শব্দ ভেসে আসছে। অনেকে মনে করেন, এই শব্দ আসলে সমুদ্রের জলরাশির, ক্ষীরসমূদ্র যেখানে বিশ্রাম নিচ্ছেন ভগবান শ্রী বিষ্ণু। তাই এই দরজা খুললে পুরো সৃষ্টিই ক্ষীর সমূদ্রে তলিয়ে যাবে।

আরো পড়ুনঃ পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে প্রথমবারের মতো নির্মাণ হচ্ছে হিন্দু মন্দির

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!