মন্দির

বেলুড় মঠ ভ্রমণ: বেলুড় মঠে গিয়ে কী কী দেখবেন এবং কীভাবে যাবেন?

কলকাতা বেড়াতে গেলে যে কটি স্থান তালিকার শীর্ষে থাকে, তাঁর মধ্যে একটি বেলুড় মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন। তবে বেলুড় মঠ ভ্রমণ করতে গেলে সঠিক সময় জেনে, তবেই যাওয়া উচিত। তা নাহলে বেলুড় মঠ গিয়ে সমস্যায় পড়তে পারেন। আমাদের আজকের আয়োজন থেকে চলুন জেনে নিই, কখন বেলুড় মঠ যাবেন এবং সেখানে কী কী দেখবেন?

বেলুড় মঠ পরিদর্শনের সময়

গ্রীষ্মকালীন সময়সূচী
এপ্রিল-সেপ্টেম্বর
সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১১.৩০টা এবং
বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬.৩০টা।

শীতকালীন সময়সূচী
অক্টোবর-মার্চ
সকাল ৬.৩০টা থেকে দুপুর ১১.৩০টা এবং
বিকাল ৩.৩০টা থেকে ৬টা।

আরো পড়ুনঃ পূর্ব ভারতের সবচেয়ে বড় শিবলিঙ্গ রয়েছে নদিয়ার রাজরাজেশ্বর শিব মন্দিরে

বেলুড় মঠে গিয়ে কী দেখবেন?

১. শ্রীরামকৃষ্ণের মন্দির

বেলুড় মঠের মূল আকর্ষণ এই মন্দির। স্বামী বিবেকানন্দের পরিকল্পনা অনুযায়ী ভারতীয় ও পাশ্চাত্য স্থাপত্য শিল্পের সংমিশ্রণে এই মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে। এই মন্দিরের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা যথাক্রমে ৬১ মিটার, ২৪ মিটার ও ৩১ মিটার। বেলে পাথর দ্বারা নির্মিত গর্ভমন্দির এবং নাটমন্দিরটি একত্রে থাকায়, মন্দিরটি অনেকটা চার্চের মতো দেখায়। মন্দিরের প্রধান প্রবেশ পথ এবং ভেতরের থামগুলি বৌদ্ধস্মৃতিবিজড়িত অজন্তাগুহার কথা মনে করিয়ে দেয়। মন্দিরটি সামনে থেকে দেখলে ওঁ আকারের মতো লাগে। মন্দিরের অভ্যন্তরে রয়েছে রামকৃষ্ণের বিগ্রহ।

বেলুড় মঠ মন্দির
বেলুড় মঠ রামকৃষ্ণ মন্দির

২. পুরাতন মন্দির

শ্রীরামকৃষ্ণের মূল মন্দিরের উত্তর-পূর্ব দিকে রয়েছে ঠাকুরের পুরনো মন্দির। ১৮৯৮ সালে স্বামী বিবেকানন্দ কর্তৃক এই মন্দির নির্মিত হয়েছিল। বেলুড় মঠের সূচনালগ্ন থেকে এখানে ঠাকুরের নিত্য পূজা হতো। স্বামীজি ও তাঁর অন্যান্য গুরুভাইরা এখানে ধ্যান-প্রার্থনা করতেন।

বেলুড় মঠ কলকাতা
বেলুড় মঠ পুরাতন মন্দির

৩. স্বামী বিবেকানন্দের কক্ষ

পুরাতন মন্দিরের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে দোতলা বাড়িতে বসবাস করতেন স্বামী বিবেকানন্দ। তাঁর ব্যবহৃত শয়ন কক্ষ এবং অন্যান্য ব্যবহৃত সামগ্রী স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়েছে। ১৯০২ সালের ৪ জুলাই এই ঘরেই স্বামীজি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এই ঘরের পশ্চিম দিকে থাকা আম গাছের তলায় বসে স্বামীজি সাধু ব্রহ্মচারী ও ভক্তদের সাথে কথা বলতেন। সেই গাছটিকে স্বামীজির আম গাছ বলে ডাকা হয়।

এছাড়া বেলুড় মঠের অন্যান্য দর্শনীয় বস্তুগুলো হলো, স্বামী ব্রহ্মনন্দজির মন্দির, সারদা দেবীর মন্দির, সমাধী পীঠ, পুরনো মঠ ও রামকৃষ্ণ সংগ্রহ মন্দির বা মিউজিয়াম। মিউজিয়ামটি সোমবার বন্ধ থাকে।

বেলুড় মঠ দর্শন
বেলুড় মঠে স্বামী বিবেকানন্দের শয়ন কক্ষ

আরো পড়ুনঃ বৃন্দাবন ধামের অজানা ইতিহাস ও ভ্রমণ গাইড

কীভাবে যাবেন বেলুড় মঠ?

হাওড়া, গড়িয়া, ইএম বাইপাস, সায়েন্স সিটি, বিমানবন্দর, দক্ষিণেশ্বর, এবং বালি থেকে বেলুড় মঠগামী বাস দিনের অধিকাংশ সময়েই পাওয়া যায়।

হাওড়া, আরামবাগ, বর্ধমান থেকে বেলুর স্টেশন পর্যন্ত বিভিন্ন ট্রেন বিভিন্ন সময়ে পাওয়া যায়।

যোগাযোগ:

রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন
পিও বেলুর মঠ, জেলা হাওড়া, পশ্চিমবঙ্গ 711202 (ভারত)
পিবিএক্স ফোন: + 91-33-2654-5700 / 8464/9581/9681
ফ্যাক্স: + 91-33-2654-4346
ওয়েবসাইট: https://belurmath.org

আপনার বেলুড় মঠ ভ্রমণ আনন্দময় হোক এই কামনায় আজ এখানেই শেষ করছি।

আরো পড়ুনঃ কারুকার্যময় হিন্দু স্থাপত্য শৈলীর অপরূপ নিদর্শন বাংলাদেশের কাদিপুর শিববাড়ি

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!