পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে প্রথমবারের মতো নির্মাণ হচ্ছে হিন্দু মন্দির
পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে প্রথমবারের মতো নির্মাণ হচ্ছে হিন্দু মন্দির
মুসলিম অধ্যুষিত একটি দেশ পাকিস্তান। অবাক করা বিষয় হচ্ছে পাকিস্তানেও হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের আবাস রয়েছে। সরকারি তথ্য অনুসারে পাকিস্তানের মাটিতে ৭৫ লক্ষ হিন্দু মানুষ রয়েছেন। যদিও বেসরকারি মতে সেই সংখ্যা আরও একটু বেশি। পাকিস্তানের হিন্দু সংগঠনগুলির দাবি ওই দেশের হিন্দুদের সংখ্যা ৯০ লক্ষ।
পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ। সারা দেশের মতো এ শহরেও অসংখ্য হিন্দু পরিবারের বসবাস। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে তাদের উপাসনার জন্য নেই কোন মন্দির। একেবারেই যে নেই তা না, কিন্তু এককালে যা ছিল, তা-ও পরিত্যক্ত বয়সের ভারে। ফলে যেকোন ধর্মীয় আচার পালনে রাজধানীবাসী হিন্দুরা রওনা দিতেন রাওয়ালপিন্ডীর দিকে। বাসিন্দারাও এইভাবেই অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন অনেকটা। কিন্তু এই দিন পাল্টাতে যাচ্ছে এখন।
আরো পড়ুনঃ আবুধাবীর বিএপিএস মন্দির, তৈরী হবে ভারতীয় স্থাপত্যশৈলী মেনে!
আর ধর্মীয় আচার পালনের জন্য যেতে হবে না অন্য শহরে। কারণ হিন্দু জনগোষ্ঠীর ভোগান্তির কথা চিন্তা করে শহর ইসলামাবাদেই তৈরী হচ্ছে হিন্দু মন্দির। এটিই হবে ইসলামাবাদে গড়ে ওঠা প্রথম কোন মন্দির। আরো ভালোভাবে বললে, হিন্দুরা শুধুমাত্র মন্দির নয়, পাচ্ছেন শেষকৃত্যের জায়গাও। কারণ এই মন্দিরের প্রাঙ্গনেই তৈরী হবে মহাশ্মশান। কারণ এখনো পরিজনের মৃত্যুর পর শ্মশানের খোজ করতে গিয়ে নাকাল হতে হয় অনেক পরিবারকে।
জানা যায়, মন্দিরটি তৈরী হচ্ছে ইসলামাবাদের এইচ-৯ সেক্টরে, আয়তন ২০ হাজার বর্গফুট। ইসলামাবাদ হিন্দু পঞ্চায়েত সমিতি এই মন্দিরের নামও নির্ধারণ করেছেন। এই মন্দির বিশ্বের কাছে ”শ্রীকৃষ্ণ মন্দির”-নামে পরিচিত হবে। পাকিস্তানের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী নুরুল হক কাদরী সূত্রে জানা যায়, এই মন্দির নির্মানে সর্বমোট ১০ কোটি টাকা খরচ হবে। নির্মান সংক্রান্ত যাবতীয় খরচ বহন করবে পাক সরকার।
আরো পড়ুনঃ মরিশাসে হিন্দু ধর্ম
ইতোমধ্যে মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়েছে। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মানবাধিকার সম্পর্কিত সংসদীয় সচিব লালচাদ মালহি। এক ক্ষুদে বার্তায় তিনি বলেন ইসলামাবাদে বিগত ২০ বছরে হিন্দু জনসংখ্যা যথেষ্ট পরিমানে বৃদ্ধি পেয়েছে। এমতাবস্থায় তাদের উপাসনার জন্য একটি মন্দির স্থাপন অবশ্যই যুক্তিযুক্ত। এছাড়া হিন্দুরা অনেকদিন থেকেই এক্টি মন্দিরের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তাদের সেই দাবী এখন পূরণের পথে।
অবশ্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ মন্দিরের জন্য ২০১৭ সালেই জমি প্রদান করেছিল। কিন্তু আমলাতান্ত্রীক জটিলতায় কাজ শুরু হতে এতো দেরী হলো। হিন্দু পঞ্চায়েত সমিতি থেকে জানা যায় এই মন্দির চত্ত্বরেরই এক পাশে তৈরী হবে শ্মশান। উইকিপিডিয়া সূত্রে জানা যায়, এর আগে ইসলামাবাদে সাইদপুর মন্দির ও ভাই ভগ সিং গুরুদুড়া কুরি মন্দির নামে দুইটি মন্দির ছিল।
আরো পড়ুনঃ জানেন কী বৌদ্ধপ্রধান থাইল্যান্ডের জাতীয় গ্রন্থ ‘রামায়ণ’, রাজার উপাধী ‘রাম’